ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েও অর্থের অভাবে ভর্তি ও পড়াশোনা করতে পারবে কিনা সেই দুশ্চিন্তায় ভুগছেন রবিউল।কষ্ট করে পড়াশোনা করতো রবিউল। অদম্য মেধাবী রবিউল ইসলামকে দমাতে পারেনি দরিদ্র্তা। দারিদ্র্যের কষাঘাতে নুন আনতে পান্তা ফুরায় এমন অবস্থা এখন রবিউলের। এত কিছুর পরেও শত কষ্ট আর দরিদ্র্যতা আটকাতে পারেনি তার মেধাকে। রবিউল ইসলাম এবছর বিশ্বের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন। ঢাবির পাশাপাশি চট্রগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়েও ভর্তির সুযোগ পেয়েছেন রবিউল।
এতকিছুর পরেও দুশ্চিন্তায় দিন কাটছে তার। উচ্চ শিক্ষায় বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িয়েছে অর্থ। কোথায় পাবে অর্থ,কে দিবেন অর্থ?এমন শংকায় রয়েছেন রবিউল ও তার পরিবার। অর্থের কাছে কি থেমে যাবে রবিউলের উচ্চ শিক্ষা। এজন্য রবিউল ও তার পরিবার সকলের সহযোগিতা কামনা করছেন।
অদম্য মেধাবী রবিউল ইসলাম লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার মহিষখোচা ইউনিয়নের তিস্তার চরাঞ্চলের দিনমজুর আব্দুল কাইয়ুমের ছেলে। ৪ ভাই বোনের মধ্যে সবার ছোট রবিউল। ইতিমধ্যে ৩ বোনের বিয়ে হয়েছে।
রবিউল ইসলামের সাথে কথা হলে তিনি জানান, এক সময় জমাজমি ও অর্থ সম্পদ ছিল তার পরিবারের। কিন্ত সর্বনাশা তিস্তা নদী তার সুখের পরিবারকে তছনছ করে দিয়েছে। ইতিমধ্যে ১২/১৩ বার নদী ভাঙ্গনের পর মাথা গোঁজার ঠাঁই হয় তিস্তার চরাঞ্চলে অন্যের জমিতে। এক বেলা খেয়ে না খেয়েও লেখাপড়া বন্ধ করেনি অদম্য মেধাবী রবিউল। একদিকে অভাব আর বন্যার কারণে মাঝে মাঝে স্কুল ফাঁকি দিতে হত তাকে।
জানা গেছে, রবিউল ইসলাম ২০১৮ সালে গোবরধন হায়দারীয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয় থেকে বিজ্ঞান শাখায় জিপিএ-৫ ও ২০২০ সালে লালমনিরহাট সরকারী কলেজে একই বিভাগ থেকে অটোপাসে জিপিএ-৪.৪২ পান। এরপর উচ্চ শিক্ষার জন্য ভর্তি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করে ঢাবিতে ক ইউনিটে ২৭৫৭ তম ও চবিতে ক ইউনিটে ৯৮৭তম স্থান লাভ করেন। এছাড়া গুচ্ছে ৫২.৫২ নম্বর রয়েছে তার। কিন্তু তার ইচ্ছে বিশ্বের অক্সফোর্ড খ্যাত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় থেকে উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করবেন। কিন্তু উচ্চ শিক্ষা গ্রহণের শুরুতেই তার বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িছে অর্থ। তিনি উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে সমাজের বিত্তবান ব্যক্তিদের সহযেগিতা কামনা করছেন। রবিউল জানান, করোনাকালীন সময়ে অন্যের বাড়ীতে দিনমজুরের কাজ করতে হয়েছে। দিনমজুরের জমানো টাকা ও বাবার দিনমজুরের টাকায় রংপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তির কোর্চিং করতে থাকা ও খাওয়ার পেছনে ব্যয় করতে হয়েছে। তবে মেধাবী হওয়ায় রংপুরের রফিক কোর্চিং সেন্টার ফ্রিতে কোর্চিং করার সুযোগ করে দেন।
রবিউল ইসলামের বাবা আব্দুল কাইয়ুম বলেন,” বাবা তোমরাগুলা মোর ছাওয়াটার দিকে দেখেন, মুইতো আর কাম (কাজ) কইরবার পাওনা। মোর বাবাটা কি টাকার জন্য পইড়বার পাবার নয়,এই দুনিয়াত কি কোন লোক সাহায্য করিবার নাই। কথাগুলো বলার এক পর্যায়ে কান্নায় ভেঙ্গে পরেন।
গোবরধন হায়দারীয়া দ্বিমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আব্দুস সোবহান বলেন, রবিউল অত্যান্ত মেধাবী একজন ছাত্র। তিনি তার উচ্চ শিক্ষা গ্রহণে সকলের সাহায্য সহযোগিতা কামনা করেন।
অদম্য মেধাবী রবিউল উচ্চ শিক্ষা গ্রহণ করে ভবিষতে একজন আদর্শ মানুষ হতে চান। কিন্তু জীবনের শুরুতেই বড় বাঁধা হয়ে দাঁড়িছে অর্থ। তিনি বলেন, সমাজে কি কোন হ্রদয়বান মানুষ নেই সাহায্য করার। একটু সহায়তা করলেই তিনি তার লক্ষ্যে পৌঁছাতে পারবেন বলে আশাবাদী। রবিউল ইসলামকে সহযোগিতা করতে চাইলে ০১৮৭৬৯৯৪৭৯৫ নাম্বারে সরাসরি যোগাযোগ করতে পারেন।