1. admin@amaderpotrika.com : admin :
  2. anisurladla71@gmail.com : Anisur :
  3. info.popularhostbd@gmail.com : PopularHostBD :
বুধবার, ২৪ এপ্রিল ২০২৪, ০১:৩১ পূর্বাহ্ন
শিরোনাম :
ভোট দিতে একসঙ্গে ঢালিউডের ‘তিন কন্যা’, জানালেন প্রত্যাশা গত নির্বাচনের পুনরাবৃত্তি চান না আসাদুজ্জামান নূর কারাবাসের ২৩ বছরে হারালেন মা-বাবা-সংসার, রেখার আশ্রয় বোনের বাড়িতে লালমনিরহাটে যমুনা টিভির প্রতিষ্ঠাবাষিকী পালিত লালমনিরহাটে জেলা পরিষদ উপ-নির্বাচনে চেয়ারম্যান হলেন শ্যামল লালমনিরহাটের আদিতমারীতে নিখোজের পরদিন তামাকের ক্ষেত থেকে শিশুর মরদেহ উদ্ধার লালমনিরহাটের চন্দ্রপুরের বেলতলা সীমান্তে বিএসএফের গুলিতে বাংলাদেশি নিহত -আহত-২ লালমনিরহাটে দাঁড়ানো যাত্রীবাহি ট্রেনে ইঞ্জিন লাগাতে গিয়ে ধাক্কা, আহত অর্ধশত যাত্রী লালমনিরহাটের দুর্গাপুর সীমান্তে বিএসএফ’র গুলিতে বাংলাদেশী যুবক আহত। স্বাধীনতা দিবসে শহীদ পুলিশ সদস্যদের প্রতি স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী-আইজিপির শ্রদ্ধা

ওপারে মেয়ের আকুতি দেশে ফিরে আসার; এপারে মায়ের আহাজারি মেয়েকে ফিরে পাবার

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : শুক্রবার, ১২ আগস্ট, ২০২২
  • ১০১ বার পড়া হয়েছে

লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় এক কলেজ ছাত্রীকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভারতে পাচার করার অভিযোগ প্রেমিক তিলক চন্দ্র শুভ(২৩)র বিরুদ্ধে। ওই ছাত্রী হাতীবান্ধা মহিলা ডিগ্রি কলেজে মাধ্যমিক ২য় বর্ষের মানবিক বিভাগের শিক্ষার্থী। এমনকি ওই শিক্ষার্থীকে জোড় পূর্বক ধর্মান্তরিত করে শাঁখা ও সিঁদুর পড়ানো হয়েছে বলে অভিযোগ করেছেন ভুক্তভোগী ওই শিক্ষাথী।

এদিকে ওই শিক্ষার্থীকে ভারতে পাচারে সব ধরনের সাহায্য সহযোগিতা করেছেন হাতীবান্ধা থানার উপ-পরিদর্শক সুকুমার রায় বলে অভিযোগ তুলেছেন ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীর পরিবারের লোকজন।

গত ১০ আগষ্ট  ওই শিক্ষার্থীর দেশে ফেরার কান্না জড়িত আকুতির একটি ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে তা মূহুর্তে ভাইরাল হয়ে যায়। ভিডিও ভাইরালের পর পরেই বাড়ি থেকে সটকে পড়েন তিলকের পরিবারের লোকজন।

ভারতে পাচার হওয়া শিক্ষার্থী হাতীবান্ধা উপজেলার সিংগীমারী গ্রামের মৃত আকতার আলীর মেয়ে। আর ওই যুবক তিলক চন্দ্র একই উপজেলার টংভাঙ্গা ইউনিয়নের গেন্দুকড়ি এলাকার বাদিয়াটারী গ্রামের ধনঞ্জয় রায়ের ছেলে।

ভাইরাল হওয়া ওই ভিডিওতে দেখা যায় ওই কলেজ ছাত্রী নিজের পরিচয় দিয়ে বলেন, আমাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে মুসলিম পরিচয়ে বিয়ে করে তিলক। অতপর ভারতে পাচার করে। এমনকি আমাকে শাঁখা- সিঁদুর পড়তে বাধ্য করে। অতপর চলে অমানবিক নির্যাতন। আমাকে এদিকে ভারতের শিলিগুড়ি এলাকার ঘোড়ার মোড়ে একটি বাসায় আটকে রেখেছে। আমাকে উদ্ধার করুন।

ছাত্রীর পরিবার ও স্থানীয় সুত্রে জানা গেছে,কলেজ শিক্ষাথী ওই ছাত্রী ও তিলক রায় ওরফে শুভ একে অপরকে ভালবাসতেন।তিলক নিজেকে মুসলিম পরিচয় দিয়ে সম্পক স্থাপন করেন।তিলক তার নামটি গোপন রেখে শুভ নাম ধারন করে সম্পক চালিয়ে যান।এরই একপযায়ে গত বছরের ৫ ডিসেম্বর বাড়ি থেকে কলেজ যাওয়ার পথে  নিখোঁজ হন ওই ছাত্রী। এ ঘটনায় চলতি বছরের ৬ জানুয়ারী ৫জনের নাম উল্লেখ করে হাতীবান্ধা থানায় একটি অপহরণ মামলা করেন ছাত্রীটির বড় ভাই কামরুজ্জামান নুলু। ওই মামলার অভিযুক্তরা হলেন, তিলক চন্দ্র ও তার বাবা ধনঞ্জয় রায়(৫০), মামা গোপাল চন্দ্র(৩২), বন্ধু হামিদুল ইসলাম হৃদয় ও মনিরুজ্জামান তান্না(১৯)। মামলার কয়েকদিন পর হৃদয়কে আটক করে জেলহাজতে পাঠায় পুলিশ। হৃদয় বর্তমান জামিনে রয়েছেন।

এদিকে চলতি মাসের ৫ আগষ্ট ভারতীয় পুলিশকে বিষয়টি অবগত করা হলে তারা ভুক্তভোগী ওই ছাত্রীকে উদ্ধার ও অভিযুক্ত তিলককে আটক থানায় নিয়ে যায়। তারা সেখানে পুলিশি হেফাজতে আছেন।

গতকাল বৃহস্পতিবার সরেজমিনে ওই শিক্ষার্থী বাড়িতে গিয়ে দেখা যায়, মেয়ের পড়ার টেবিলের পাশে বসে ছবি বুকে নিয়ে কাঁদছেন তার মা খতিজন নেছা(৭০)। আর আর্তনাদ করে বলছেন, সাত/আট মাস থেকে মেয়েকে দেখিনা। আমার মেয়েকে প্রতারনা করে ভারতে পাচার করেছে। আমি আর কিছু চাইনা৷ আমি আমার মেয়েকে চাই। তোমরা আমার মেয়েকে এনে দাও। একথা বলেই ডুকরে-ডুকরে কাঁদছেন তিনি।

এ সময় পাশে থাকা ভাবি রশীদা বেগম বলেন, আমার যখন বিয়ে হয় তখন সে ছোট। তাকে নিজের মেয়ের মত করে মানুষ করেছি। অনেকদিন হলো তাকে দেখিনা৷ বুক ফেটে কান্না আসে। কিন্তু কিছু করতে পারছিনা। আপনারা ওকে ফিরিয়ে আনেন।

 এ সময় কান্না জড়িত কন্ঠে বড় বোন ফাতেমা বেগম বলেন, ও আমাদের আদরের ছোট বোন। আপনাদের কাছে অনুরোধ ওকে ফিরিয়ে আনেন। আর যারা তাকে পাচার করেছেন তাদের কঠিন শাস্তি দিন।

বড় ভাই কামরজ্জামান নুলু বলেন, আমার বোনকে প্রেমের ফাদে ফেলে অপহরণ করা হয়। কিন্তু এসআই সুকুমার আমার বোনকে উদ্ধার না করে উল্টো ওকে ভারতে পাচারে সহযোগিতা করেছেন। আমি তাদের কঠিন বিচার চাই।

ছাত্রীর ভাই জাহাঙ্গীর বলেন, আমার বোনকে খুজে আনতে এসআই সুকুমার রায় ৩০ হাজার টাকা নিয়েছে। কিন্তু সে খুজেতো আনেনি উল্টো ওদের কাছ থেকে মোটা অংকের টাকা নিয়ে পাচারে সহযোগিতা করেছেন। আমি আমার বোনকে ফেরত চাই।

এদিকে সরেজমিনে তিলক চন্দ্রের বাড়ি বাদিয়ারটারী গ্রামে গিয়ে বাড়িতে কাউকে পাওয়া যায়নি।বাড়ির কোন ঘরের  দরজায় তালা আবার কোন দরজা বন্ধ দেখা গেছে।

 এ সময় স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, তারা কোথায় আছেন আমরা জানিনা। তবে লোক মুখে শুনেছি তিলক একটি মুসলমান মেয়েকে পালিয়ে নিয়ে বিয়ে করেছে। সেই মেয়ে এখন ভারতে আছে। সেটাও আমরা ফেসবুকে দেখেছি।

এ বিষয়ে ওই্ শিক্ষাথীর কলেজের সহপাঠী হামিদা খাতুন, মৌমিতা,সহ আরও অনেকে বলেন,আমাদের বান্ধবী খুবই ভদ্র মেয়ে। তাকে প্রেমের ফাঁদে ফেলে ভারতে পাচার করেছে বখাটে তিলক চন্দ্র ওরফে শুভ।আমাদের বান্ধবীকে অতি দ্রুত উদ্ধার করে বাংলাদেশে নিয়ে আসা হোক। আর বখাটে তিলকের কঠিন শাস্তির দাবী করছি।

এ বিষয়ে হাতীবান্ধা মহিলা ডিগ্রি কলেজের অধ্যক্ষ মোতাহার হোসেন লাভলু বলেন,সে একজন মেধাবী ছাত্রী। আমরা চাই তাকে যেনো অতিদ্রুত উদ্ধার করে বাংলাদেশ নিয়ে আসা হোক। আর সেই সাথে অপরাধী দের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দাবি করছি।

টাকা নেওয়ার বিষয়টি অস্বীকার করে হাতীবান্ধা থানার এসআই,,মামলা তদন্তকারী অফিসার সুকুমার রায় বলেন, ছেলে মেয়ে উভয় উভয়কে ভালোবেসে বিয়ে করেছে। এখানে ছেলের বাবা-মামার কোন সম্পৃক্ততা পাইনি। তাই তাদের নাম চাজসিট থেকে বাদ দেয়া হয়েছে।

হাতীবান্ধা থানার ওসি শাহা আলম বলেন, ওই শিক্ষার্থী ভারতে আইনের আশ্রয়ে আছে। তাকে দেশে ফিরে আনার বিষয়ে উর্ধতন কর্তৃপক্ষের মাধ্যমে যথাযথ ব্যবস্থা করা হচ্ছে।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved
Design BY POPULAR HOST BD