1. admin@amaderpotrika.com : admin :
  2. anisurladla71@gmail.com : Anisur :
  3. info.popularhostbd@gmail.com : PopularHostBD :
শনিবার, ১৮ জানুয়ারী ২০২৫, ০৯:২২ অপরাহ্ন
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে গার্ল গাইডসের শীতবস্ত্র বিতরন লন্ডন ক্লিনিকে খালেদা জিয়া ঘন কুয়াশা আগামীকাল দুপুর পর্যন্ত স্থায়ী হতে পারে লালমনিরহাটে জাতীয় সমাজসেবা দিবস উপলক্ষে ওয়াকাথন ও মুক্ত আড্ডা লালমনিরহাটের পাটগ্রামে বিজিবির উদ্যোগে শীতবস্ত্র বিতরন ও আলোচনা সভা রাজনৈতিক সরকার ছাড়া দেশ সুষ্ঠুভাবে পরিচালিত হয় না- লালমনিরহাটে আসাদুল হাবিব দুলু বৈষম্য বিহীন বাংলাদেশ গড়তে গুরুত্বপূর্ণ ভুমিকা রাখবে সংবাদপত্র : কালীগঞ্জ প্রেসক্লাবের ৩৫ তম প্রতিষ্ঠাবার্ষিকীতে- লালমনিরহাট পুলিশ সুপার দীর্ঘ ১৬ বছর বাজেট বৈষম্যের শিকার লালমনিরহাটসহ উত্তরাঞ্চল- কেমন লালমনিরহাট দেখতে চান” শীর্ষক সেমিনারে –অধ্যক্ষ আসাদুল হাবিব দুলু লালমনিরহাটের ৩ শিক্ষার্থী ওয়াল্ড চ্যাম্পিয়নশীপ অন ক্লাইমেট অ্যাকশন-২০২৪ এ অংশ নিতে নেপাল যাচ্ছে। তুষভান্ডারে ইসলামী ব্যাংক বংলাদেশ পিএলসির উপশাখা উদ্বোধন

লালমনিরহাটে নদী ভাঙনে দিশেহারা তিস্তাপাড়ের মানুষ

লালমনিরহাট প্রতিনিধি
  • প্রকাশের সময় : শনিবার, ৬ আগস্ট, ২০২২
  • ২০৮ বার পড়া হয়েছে

তিস্তা নদীর পানি কমে যাওয়ায় লালমনিরহাটে ভাঙন বেড়েছে তিস্তাপাড়ে। দেখতে দেখতেই সামনে বিলীন হচ্ছে বাড়িঘর,গাছপালা ও ফসলি জমি। মাথা গোঁজার ঠাঁই পেতে দিশেহারা তিস্তাপাড়ের মানুষ।

জানা গেছে,তিস্তা নদী ভারত থেকে প্রবাহিত হওয়ার পর নীলফামারী জেলার কালীগঞ্জ সীমান্ত হয়ে বাংলাদেশে প্রবেশ করে তিস্তা নদী। যা লালমনিরহাট, নীলফামারী, রংপুর ও গাইবান্ধা জেলার ওপর দিয়ে প্রবাহিত হয়ে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী বন্দর হয়ে ব্রহ্মপুত্র নদের সঙ্গে মিশে যায়। দৈর্ঘ প্রায় ৩১৫ কিলোমিটার হলেও বাংলাদেশ অংশে রয়েছে প্রায় ১২৫ কিলোমিটার।

ভারতের গজলডোবায় বাঁধ নির্মাণের মাধ্যমে ভারত সরকার এক তরফা তিস্তার পানি নিয়ন্ত্রণ করায় শীতের আগেই বাংলাদেশ অংশে তিস্তা মরুভূমিতে পরিণত হয়। বর্ষা মৌসুমে অতিরিক্ত পানি প্রবাহের ফলে বাংলাদেশ অংশে ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। বন্যায় সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয় তিস্তার বাম তীরের জেলা লালমনিরহাট।

তিস্তা নদী জন্মলগ্ন থেকে খনন না করায় পলি পড়ে ভরাট হয়েছে নদীর তলদেশ। ফলে পানি প্রবাহের পথ না পেয়ে বর্ষাকালে উজানের ঢেউয়ে লালমনিরহাটসহ ৫টি জেলায় ভয়াবহ বন্যার সৃষ্টি হয়। এ সময় নদী ভাঙনও বেড়ে যায় কয়েকগুণ। প্রতি বছরই নদী পরিবর্তন করছে তার গতিপথ। ফলে লালমনিরহাটে বিস্তীর্ণ জমি বালুময় চরাঞ্চলে পরিণত হচ্ছে।

বর্ষায় ভয়াবহ বন্যার ধকল কাটিয়ে উঠতে না উঠতেই ভাঙন আতঙ্কে পড়ে তিস্তাপাড়ের বাসিন্দারা। গেল সপ্তাহে বন্যার পানি নেমে যাওয়ার পরপরই তিনদিন ধরে তীব্র ভাঙনের মুখে পড়ে নদীপাড়ের মানুষ। এক একটি পরিবার ৭/৮ বার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে সরিয়ে নিয়েছেন বসতভিটা। কেউ কেউ রাস্তার ধারে বা বাঁধের পাশে মানবেতর জীবন যাপন করছেন।

গত তিনদিনে লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের খামারটারী ,চোংগাদ্বার পাড়া ও পূর্ব কালমাটি ও গোকুন্ডা ইউনিয়নের চর গোকুন্ডা গ্রামের প্রায় ৪০/৪৫টি বাড়িঘর ও ফসলী জমি নদীগর্ভে বিলীন হয়েছে। ভাঙনের মুখে পড়েছে চোংগাদ্বারা উচ্চ বিদ্যালয়, খুনিয়াগাছ ইউনিয়ন পরিষদ, ভূমি অফিস, খুনিয়াগাছ উচ্চ বিদ্যালয়সহ নানা প্রতিষ্ঠান ও স্থাপনা। নদীর কিনারায় পড়েছে নির্মাণাধীন চোংগাদ্বারা উচ্চ বিদ্যালয়ের চারতলা বিশিষ্ট ভবনসহ শতাধিক বসতবাড়ি।

লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক মো.আবু জাফর গতকাল শুক্রবার বিকেলে খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের ভাঙ্গনকবলিত এলাকায় পরিদর্শন করেন।পরে তিনি নৌকায় করে ভাঙ্গনকবলিত এলাকাগুলোয় যান এবং  নদীভাঙ্গনে ক্ষতিগ্রস্থ মানুষজনের সংগে কথা বলেন।তিনি পানি উন্নয়ন বোডের কমকতাদের নিদেশ দেন যেসব জায়গায় ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে সেইসব জায়গায় জিও ব্যাগ ফেলে ভাঙ্গন রোধ করতে।এসময় অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক(রাজস্ব) টিএম এ মমিন,সদর উপজেলা নিবাহী অফিসার ,এসি ল্যান্ড,পানি উন্নয়ন বোড কমকতা ও স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান উপস্থিত ছিলেন।

 লালমনিরহাট সদর উপজেলার খুনিয়াগাছ ইউনিয়নের পূর্ব কালমাটি গ্রামের বিধবা স্ত্রী মিনু বেওয়া চারবার নদী ভাঙনের শিকার হয়ে অন্যের জমি ৩০ হাজার টাকায় বন্দক নিয়ে তিনটি ঘর করে দুই ছেলেকে নিয়ে বসবাস করছেন। সেই বসতভিটাও নদীর মুখে পড়েছে। বন্দকি জমি নদী গর্ভে বিলীন হওয়ায় বন্দকের ৩০ হাজার টাকাও দিচ্ছেন না জমির মালিক। টাকার অভাবে মাথা গোজার ঠাঁই করতে পারছেন না। স্থানীয়দের সহায়তায় ও নিকট আত্মীয় স্বজনদের দিয়ে ৫ জুলাই শুক্রবার ঘর তিনটি সরিয়ে পাশের একজনের জমিতে রেখেছেন। নতুনভাবে বাড়ি করার কোনো উপায় না পেয়ে দিশেহারা মিনু বেওয়া।

মিনু বেওয়া আরো বলেন, চারবার ঘর বাড়ি সরাতে গিয়ে সম্বল শেষ করেছি। এখন ঘর খুলে অন্যের জমিতে রেখেছি। রাতে কোথায় থাকব জানি না। এক সময় নিজের অনেক জমি ছিল। এখন দাঁড়িয়ে থাকার মত কোনো জমি নেই। টাকা ছাড়া মিলে না জমি। সেই টাকাও নেই।

পাশের গ্রাম খামারটারীর করিমউদ্দিন,আফসার,মেহের বানু,মজিনা বলেন, নদীভা্ঙগনে বসতবাড়িরে সাথে কবরগুলোও নদীগভে বিলীন হয়েছে। রাতে ঠিকমতো ঘুমাতে পারি না। কখন যে ঘর বাড়ি নদীতে ভেঙে যায়। সেই আতঙ্কে ঘুম নেই। কয়েকদিন আগে উপজেলা চেয়ারম্যান কিছু জিও ব্যাগ দিয়ে কোনো রকম ভাঙনটা রক্ষা করেছেন। নয়তো এতদিনে এ গ্রাম নদীগর্ভে বিলীন হত। রিলিফ নয়, তারা দ্রুত নদী খনন করে,বাঁধ দিয়ে এর স্থায়ী সমাধান দাবি করেন।

শুধু খামারটারী,চর গোকুন্ডা,চোংগাদ্বারপাড়া আর পূর্ব কালমাটি নয়। ভাঙন আতঙ্কে রয়েছে তিস্তা নদীর বাম তীর ঘেঁষা প্রতিটি গ্রামের মানুষ। এসব মানুষের দীর্ঘদিনের দাবি তিস্তা নদী খনন করে স্থায়ী বাঁধ নির্মাণের। যাতে অনাবাদি থাকা তিস্তার বুকের হাজার হাজার বিঘা জমি চাষাবাদের আওতায় আসে। এসব জমি চাষাবাদ করে সংসার চালাবেন তারা।

লালমনিরহাট পানি উন্নয়ন বোর্ডের নির্বাহী প্রকৌশলী মিজানুর রহমান বলেন,লালমনিরহাট জেলার ৫টি উপজেলা নদীবেষ্টিত হলেও এবারে তিস্তার ভাঙনটা সদর উপজেলায় কিছুটা বেশি। ঝুঁকিপূর্ণ এলাকায় ভাঙন রোধে জরুরি ভিত্তিতে কাজ চলমান রয়েছে। কিছু কিছু স্থানে রোধ করা সম্ভব হয়েছে। যেসব জায়গায় নতুন করে ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে সেসব জায়গায় ভাঙ্গনরোধে ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।

সংবাদ টি শেয়ার করুন

এ বিভাগের আরো সংবাদ
© All rights reserved
Design BY POPULAR HOST BD