লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বন্ধুকে মারধরের বিচার ও সাক্ষী দেয়ায় মেহেদি হাসান লিখন নামের এক শিক্ষার্থীকে বেধড়ক মারধর করেন বখাটে সিফাত ও জয়। সেই মারধরের ঘটনাটির ভিডিও ধারন করে তাদের সহযোগী মাহবুব। সেই ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে ছড়িয়ে পড়লে মূহুর্তের মধ্যে তা ভাইরাল হয়ে যায়। গুরুতর আহত ওই শিক্ষার্থী বর্তমানে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সে চিকিৎসাধীন আছেন।
গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে উপজেলার কেতকীবাড়ী মাদ্রাসা মাঠে এ ঘটনাটি ঘটেছে। এ ঘটনায় মামলা দায়েরের প্রস্তুতি চলছে বলে জানান ওই শিক্ষার্থীর বাবা রাকিব হাসান।
অভিযুক্তরা হলেন, উপজেলার কেতকীবাড়ী এলাকার হাসানুর রহমান হিরুর ছেলে সিফাত(১৮), দুলু মিয়ার ছেলে জয়(২০) ও মাহবুব হোসেন(২২)।
আহত শিক্ষার্থী লিখন ওই এলাকার রাকিব হাসানের ছেলে এবং কেতকীবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের দশম শ্রেনীর মানবিক শাখার শিক্ষার্থী।
জানা গেছে , তুচ্ছ ঘটনাকে কেন্দ্র করে গত বুধবার বিদ্যালয় চলাকালীন অভিযুক্তরা ক্লাস রুমে প্রবেশ করে কিছু শিক্ষার্থীকে মারধর করে। এ সময় প্রতিবাদ করলে তারা মেহেদি হাসান লিখনের উপর চড়াও হয়। পরে বিদ্যালয়ের শিক্ষকরা এসে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে। এ নিয়ে ঘটনার পরের দিন(২জুন) বৃহস্পতিবার দুপুরে সকলের উপস্থিতিতে বিষয়টি নিয়ে আপোস মিমাংসা করা হয়। এদিকে গতকাল বৃহস্পতিবার বিকেলে লিখন স্কুল থেকে বাড়ি যাওয়ার পথে ডেকে এনে লাঠি দিয়ে বেধড়ক মারধর করেন সিফাত ও জয়। সেই মারধরের ভিডিও করেন তাদের সহযোগী মাহবুব।মারধরের এক পযায়ে লিখন আহত হলে তাকে ওখানে রেখে চলে যায় তারা। পরে খবর পেয়ে লিখনের পবিবার তাকে উদ্ধার হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করান।
শুক্রবার বিকেলে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে গিয়ে দেখা আহত শিক্ষার্থী লিখন ব্যাথার যন্ত্রনায় কাতরাচ্ছে। তার মুখে ও শরীরের আঘাতের চিহৃ। এ সময় তার সাথে কথা হলে লিখন বলেন, জয় ও সিফাত আমাকে লাঠি ও গাছের ডাল দিয়ে এলোপাতারি মারধর করে। আর সেই মারধরের ভিডিও করেন মাহবুব। আমি এর বিচার চাই।
লিখনের বাবা রাকিব হাসান বলেন, তারা আমার ছেলেকে অমানবিক ভাবে মারধর করেছে বলেই কাঁদতে থাকেন তিনি। পরে কান্না থামিয়ে তিনি বলেন আমি থানায় অভিযোগ দিবো। আমি ওদের কঠিন বিচার চাই।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে জয় বলেন, সে আমার ফুপাতো ভাই হয়। আমার সাথে বেয়াদবী করছে তাই মারছি। আপনার কিছু জানার থাকলে সরাসরি দেখা করেন বলেই কলটি কেটে দেন।
এ বিষয়ে কেতকীবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মিজানুর রহমান বলেন, বিদ্যালয় চলাকালীন মারধরের ঘটনাটি মিমাংসা করা হয়েছে। পরবর্তীতে এ ঘটনাকে কেন্দ্র করে আবার মারধর করা হয়। লিখনের বাবাকে আইনের আশ্রয় নিতে বলা হয়েছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা একাডেমিক সুপারভাইজার শহিদুল ইসলাম বলেন, মারধরের একটি ভিডিও সোস্যাল মিডিয়ায় দেখেছি। ওই শিক্ষার্থীর পরিবার বা বিদ্যালয় থেকে এখনো জানায়নি। তবে তারা বিষয় আমাদের অবগত করলে তদন্ত করে ব্যবস্থা নেয়া হবে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা উপজেলা স্বাস্থ্য-কমপ্লেক্সের জরুরী বিভাগের কর্মরত চিকিৎসক ডাঃ ধিমান রায় বলেন, ছেলেটিকে অনেক মারধর করা হয়েছে। শরীরে দাগ রয়েছে। তার চিকিৎসা সেবা দেয়া হচ্ছে।
এ বিষয়ে হাতীবান্ধা থানা ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) এরশাদুল আলম বলেন, খবর পেয়ে ওই এলাকায় ও হাসপাতালে পুলিশ পাঠানো হয়েছে।ভিডিও টি দেখেছি। খোঁজ খবর নিয়ে দ্রুত ব্যবস্থা নেয়া হবে।