বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতিতে রেলপথ ঘিরে নাশকতা বেড়েছে। এবার নাশকতা ঠেকাতে কমানো হয়েছে রেলের গতি।
আর এতে করে তীব্র শিডিউল বিপর্যয়ের শঙ্কা দেখা দিয়েছে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) রাজধানীর কমলাপুর স্টেশন থেকে পূর্বাঞ্চলের বেশিরভাগ ট্রেন ছেড়েছে দুই থেকে তিন ঘণ্টা দেরি করে। নাশকতার আশঙ্কা থাকায় রেলওয়ের পূর্বাঞ্চল থেকে ট্রেনের গতিসীমা ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটারে বেঁধে দেওয়া হয়েছে।
এ বিষয়ে কমলাপুর রেলওয়ে স্টেশনের স্টেশন মাস্টার মোহাম্মদ আনোয়ার হোসেন গণমাধ্যমকে বলেন, ট্রেনগুলো ঢাকায় দেরিতে পৌঁছেছে বলে দেরিতে ছেড়ে যাচ্ছে। এছাড়া নাশকতার আশঙ্কা থাকায় গুরুত্বপূর্ণ লাইনগুলোয় যাত্রীবাহী ট্রেন ছাড়ার আগে পাইলট ইঞ্জিন যাচ্ছে। এতে করে সময় বেশি লাগছে। এর বাইরে কোনো কারণ নাই।
পূর্বাঞ্চলের এসসিওপিএস কর্মকর্তা মোহাম্মদ আবু বক্কর সিদ্দিকীর সই করা এক চিঠিতে পূর্বাঞ্চলের ৯টি সেকশনে নিয়মিত ট্র্যাক পেট্রোলিং করার কথা বলা হয়েছে। ১৪ ডিসেম্বর দেওয়া নির্দেশনায় বলা হয়েছে, ঢাকা-আখাউড়া, চট্টগ্রাম-কক্সবাজার, চট্টগ্রাম-আখাউড়া, শায়েস্তাগঞ্জ-শ্রীমঙ্গল-সিলেট, গৌরীপুর-ময়মনসিংহ-শ্যামগঞ্জ, আখাউড়া-ভৈরববাজার, টঙ্গী-ভৈরববাজার, জয়দেবপুর-গফরগাঁও, ময়মনসিংহ-সম্বুগঞ্জ সেকশন নিয়মিত পেট্রোলিং করতে হবে।
একইসঙ্গে রাত ১১টার পর থেকে সকাল ৬টা পর্যন্ত চলাচলরত ট্রেনসমূহকে ৪০ থেকে ৫০ কিলোমিটার গতিতে পরিচালনা করতে হবে।
শুক্রবার (১৫ ডিসেম্বর) ঢাকা রেলওয়ে স্টেশনের অনবোর্ড স্ক্রিনে সকাল ৭টা ২০ মিনিটে দেখা যায়, রাজশাহীগামী ধূমকেতু এক্সপ্রেস (৭৬৯) ভোর ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ছেড়ে যায়নি; সিলেটগামী পারাবত এক্সপ্রেস (৭০৯) ভোর সাড়ে ৬টায় ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়েনি; চট্টগ্রামগামী সোনার বাংলা এক্সপ্রেস (৭৮৮) সকাল ৭টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়েনি।
পরে সকাল সাড়ে ৮টার সময় দেখা যায়, কিশোরগঞ্জগামী এগার সিন্দুর প্রভাতী (৭৩৭) সকাল ৭টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়েনি; দেওয়ানগঞ্জ বাজারগামী তিস্তা এক্সপ্রেস (৭০৭) সকাল সাড়ে ৭টায় ছাড়ার কথা থাকলেও সেটি ছাড়েনি; মোহনগঞ্জগামী মহুয়া কমিউটার (৪৩) সকাল ৮টা ১৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি যাত্রা শুরু করেনি।
এদিকে, চট্টগ্রামগামী মহানগর প্রভাতী (৭০৪) সকাল ৭টা ৪৫ মিনিটে ছেড়ে যাওয়ার কথা থাকলেও সেটি ঢাকা ছাড়ে ৮টা ২৫ মিনিটে। এর বাইরে সারাদিনের সব ট্রেনের কমবেশি শিডিউল বিপর্যয় ছিল।
রেলওয়ে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন, ঢাকায় ট্রেন আসতে বিলম্ব হওয়া, ঘন কুয়াশা ও নাশকতার আশঙ্কায় গতি কমানো হয়েছে। এতে করে কমবেশি সব ট্রেনের সময়ে পরিবর্তন হয়েছে।
এরআগে, ১৩ ডিসেম্বর নেত্রকোনা থেকে ঢাকাগামী মোহনগঞ্জ এক্সপ্রেস গাজীপুরে দুর্ঘটনায় পড়ে। সেখানে ২০ ফুটের মতো রেললাইন কেটে রাখা হয়েছিল। এতে ট্রেনের ইঞ্জিনসহ সাত বগি উল্টে গিয়ে একজন নিহত ও সাতজন আহত হন। এরপর থেকেই এই রুটের ট্রেনগুলোকে ধীরে চালানোর কথা বলা হয়েছে। যার প্রভাব পড়েছে ওই অঞ্চলে চলাচলরত সবগুলো ট্রেনে।