লালমনিরহাটের হাতীবান্ধায় বাংলাদেশের অভ্যন্তরে অনুপ্রবেশ করে জোহরা বেগম নামের এক বৃদ্ধাকে মারধর ও ভাংচুরের অভিযোগ উঠেছে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) বিরুদ্ধে। মঙ্গলবার দুপুরের উপজেলার সিংগীমারী ইউনিয়নের পকেট নামক সীমান্ত এলাকায় ঘটনাটি ঘটেছে। ভুক্তভোগী ওই বৃদ্ধা উপজেলার সিংগীমারী ইউনিয়নের পকেট নামক সীমান্ত এলাকার মৃত ছকদ্দির স্ত্রী।
স্থানীয় বাসিন্দা নূরল ইসলাম বলেন, মঙ্গলবার দুপুরে বৃদ্ধা জোহরা বেগম ভারতীয় সীমান্তের নিকট বাংলাদেশের অভ্যন্তরে কাপড় শুকাতে যায়। এ সময় ভারতের কুচবিহার জেলার শিতলকুচি এলাকার ফুলবাড়ী বিএসএফ ক্যাম্পের এক সদস্য বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে ওই বৃদ্ধাকে টানা হেছড়া শুরু করে। এরই এক পর্যায়ে তাকে মারধর শুরু করে। স্থানীয়রা তা দেখে ছুটে গেলে বিএসএফ’র আরও বেশ কয়েকজন সদস্য এসে বাংলাদেশের অভ্যন্তরে প্রবেশ করে আবাদি জমি নষ্ট, জমির বেড়া ভাংচুর ও ফাঁকা গুলি ছুড়ে। পরে খবর পেয়ে বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ (বিজিবি) সিংগীমারী ক্যাম্পের সদস্যরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনে।
সিংগীমারী বিজিবি ক্যাম্পের ইনচার্জ নাসির হোসেন জানান, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে উপস্থিত হয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রনে আনি। এ ঘটনায় বাংলাদেশের পক্ষ থেকে প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক রয়েছে।
ভুক্তভোগী জোহরা বেগম বলেন, আমি বাংলাদেশের অংশে কাপড় শুকাতে গেছি। এ সময় দেখি একজন বিএসএফ আমার পিছনে দৌড়ে আসছে। তাকে দেখে আমিও দৌড় দেই। কিন্ত সে আমাকে ধরে টানা হেছড়া শুরু করে। এর এক পর্যায়ে মারধর শুরু করে। আমার চিতকার শুনে লোকজন ছুটে আসলে তারা ফাঁকা গুলি ছুড়ে। এমনকি এ সময় আরও কয়েকজন বিএসএফ সদস্য এসে আবদি জমি নষ্ট করে ও জমির বেড়া ভাংচুর করে।
সিঙ্গিমারী ইউপি সদস্য সামছুল আলম বলেন, বিএসএফ বাংলাদেশের অভ্যন্তরে ঢুকে এক বৃদ্ধা নারীকে মারধর করেন ও ফাঁকা রাবার বুলেট ছুড়ে। ঘটনাটি তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া দরকার।
সিংগীমারী ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মনোয়ার হোসেন দুলু বলেন, মারধর হয়েছে কিনা জানিনা। তবে একটা ঝামেলা হয়েছিলো। সেখানে বিএসএফ ফাঁকা গুলি ছুড়েছে। আমি এক ইউপি সদস্যকে সেখানে পাঠিয়েছি খোঁজখবর নিতে।
বর্ডার গার্ড বাংলাদেশ বিজিবি–৬১ তিস্তা ব্যাটলিয়নের অধিনায়ক লেঃ কর্নেল শেখ মোহাম্মদ মুসাহিদ মাসুম বলেন, বিষয়টি জানার পর প্রতিবাদ জানানো হয়েছে। পুরো ঘটনাটি জানতে বিজিবকে তদন্ত করার জন্য বলা হয়েছে। এছাড়া বিএসএফর সাথে পতাকা বৈঠকের আয়োজন করা হয়েছে।