প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, আমরা জনগণের সেবক। আমিও সরকার গঠন করার পর আমার বাবার মতো বলেছিলাম, আমি জনগণের সেবক। আমি শাসক হিসেবে নয়, সেবক হিসেবে কাজ করি।
তিনি বলেন, এদেশের মানুষের সেবা করাই আমরা একমাত্র কাজ। মানুষকে সুন্দর জীবন দেওয়া, সেটাই আমার একমাত্র কাজ। সেইভাবে কিন্তু আমি এই দেশটাকে পরিচালনা করছি।
১৫মে(সোমবার) রাজধানীর শাহবাগে বাংলাদেশ সিভিল সার্ভিস প্রশাসন একাডেমিতে ১২৭, ১২৮ এবং ১২৯-তম আইন ও প্রশাসন প্রশিক্ষণ কোর্সসমূহের সমাপনী ও সনদ-বিতরণ অনুষ্ঠানে তিনি এ আহ্বান।
জাতির পিতার একটি ভাষণ থেকে উদ্ধৃত করে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, সরকারি কর্মচারী ভাইয়েরা, আপনাদের জনগণের সেবায় নিজেদের উৎসর্গ করতে হবে। জাতীয় স্বার্থকে সব কিছুর ঊর্ধ্বে স্থান দিতে হবে। এখন থেকে অতীতের আমলাতান্ত্রিক মনোভাব পরিবর্তন করে নিজেদের জনগণের খাদেম বলে বিবেচনা করতে হবে।
তিনি বলেন, একজন মা যেমন একটি সংসারকে আগলে ধরে সবার ভালো দেখতে চান, আমি কিন্তু সেই মানসিকতা নিয়ে দেশটাকে পরিচালনা করে এ পর্যন্ত নিয়ে এসেছি। এখান থেকে যেন আর আমাদের পিছিয়ে যেতে না হয়। সেদিকে সবাইকে দৃষ্টি দিতে হবে।
শেখ হাসিনা বলেন, সাধারণ মানুষ যেন ন্যায় বিচার পায়। মাদক, জঙ্গিবাদ, সন্ত্রাস ও দুর্নীতির হাত থেকে যেন মানুষ মুক্তি পায়। এগুলো সমাজটাকে নষ্ট করে, একেকটা পরিবারকে নষ্ট করে। সেদিকে আমাদের বিশেষ ভাবে দৃষ্টি দেওয়া একান্ত ভাবে দরকার।
তিনি বলেন, আমরা চাই আমাদের তরুণ প্রজন্ম দেশ প্রেমে উদ্বুদ্ধ হয়ে যেন দেশকে এগিয়ে নিয়ে যায়।
প্রধানমন্ত্রী অপচয় রোধের পাশাপাশি অর্থনৈতিক অবস্থা বিবেচনা করে কৃচ্ছ্রতা সাধনের করারও পরামর্শ দেন।
শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ এখন বিশ্বে ৩৫তম অর্থনীতির দেশ হিসেবে স্বীকৃতি পেয়েছে। আমাদের দারিদ্র্যের হার ৪১ ভাগ ছিল। তা আমরা ১৮ দশমিক ৭ ভাগে নামাতে পেরেছি। অন্তত আরও ২ থেকে ৩ শতাংশ আমাদের নামাতেই হবে।
তিনি বলেন, অতি দারিদ্র্যের হার যা ২৫ দশমিক ৯ ভাগ ছিল, তা আমরা এখন ৫ দশমিক ৬ ভাগে নামিয়ে এনেছি। কিন্তু আমরা চাই না বাংলাদেশে একজন মানুষও অতি দরিদ্র থাকুক। এটাকে একেবারে শূন্যের কোটায় আমরা নামিয়ে আনতে চাই। কাজেই কোথায় এখনও এ ধরনের মানুষ আছে, আমরা সেদিকে বিশেষভাবে দৃষ্টি দেব।
প্রধানমন্ত্রী বলেন, কাঠামোগতভাবে, খাদ্য উৎপাদনের দিক থেকে, শিক্ষায়-দীক্ষায়, ডিজিটাল সেবা, প্রযুক্তি, সব দিক থেকে আজ বাংলাদেশে একটা বিরাট পরিবর্তন আমরা নিয়ে এসেছি। এটা যেন ব্যাহত না হয়। কারণ আমার একটা আশঙ্কা আছে। … (যুদ্ধ বিধ্বস্ত দেশে) যখন সমস্ত কিছু কাটিয়ে ওঠে বাংলাদেশকে আর্থ-সামাজিক উন্নয়নের পথে জাতির পিতা এগিয়ে নিয়ে যাচ্ছিলেন, এমনকি যে চালের দাম ১০ টাকায় উঠে গিয়েছিল সেই চালের দাম তিন টাকায় নেমে এসেছিল। আমাদের প্রবৃদ্ধি ৯ ভাগে উন্নীত হলো, যখন মানুষের মধ্যে স্বস্তি ফিরে এলো, মানুষ আত্মবিশ্বাস ফিরে পেলো, আমরা এগিয়ে যাব, ঠিক সে সময় কিন্তু ১৫ আগস্টের ঘটনাটা ঘটল। আমাদের সব আকাঙ্ক্ষা ধূলিসাৎ হয়ে গেল।
তিনি বলেন, ২১ বছর, পরে আবার আট বছর, এই ২৯ বছর জাতির জীবনে উন্নয়নের ধারাটা একদম থেমে গিয়েছিল। ২০০৯ সালে সরকার গঠন করে আজ ২০২৩ পর্যন্ত বাংলাদেশকে একটা জায়গায় আমরা আনতে পেরেছি।