আসছে ফাল্গুনের ৫ তারিখ হিন্দু ধর্মালম্বীদের শিব চতুর্দশী পূজা। আর এই পূজাকে ঘিরে হাজারো ভক্তের সমাগম হয় লালমনিরহাটের হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম নওদাবাসের প্রায় শত বছরের পুরোনো বটতলী শ্বশান ও শিব মন্দিরের। তবে যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় চিন্তিত হয়ে পড়েছে এ সম্প্রদায়ের লোকজনের। এ ছাড়াও মন্দিরে সাথে শ্বশানে মৃতদের দাহ করতে লাশ নিয়ে যাওয়াসহ মন্দিরে পূজা অর্চনা করতে নানা রকম ভোগান্তি পোহাতে হয় তাদের।
এ বিষয়ে সম্প্রতি হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার বরাবর লিখিত আবেদন করেন বটতলী শ্বশান ও শিব মন্দিরের পক্ষে তাপস চন্দ্র।
জানা গেছে,হাতীবান্ধা উপজেলার পশ্চিম নওদাবাসের শত বছরের পুরোনো বটতলী শ্বশান ও শিব মন্দিরটি অবস্থিত। এ এলাকার প্রায় ৪শ হিন্দু সম্প্রদায় পরিবার এ মন্দিরে পূজা অচর্ন করে আসছে। মন্দির ও শ্বশানের নামে ৬০ শতক জমিও আছে। তবে সেখানে অন্যের আবাদি জমির আইল দিয়ে কোন রকম যাওয়া যায়। এতে করে মন্দিরে প্রবেশ, পূজা অর্চনা ও লাশ দাহ করতে গিয়ে নানা ভোগান্তির স্বীকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন। মৃত লাশ দাহ করতে শ্বশানে নিতে হলে আবাদি জমির সরু আইল রাস্তা দিয়ে যেতে গেলে ফসলের ক্ষতি হয়। এতে করে জমির মালিকদের সাথে তর্কবিতর্ক হয়। জমির মালিকরা তাদের জমির উপর দিয়ে যাতায়াত করতে বাধা দেয়। তবে কয়েক বছর আগে স্থানীয় ব্যক্তিবর্গরা মিলে একটি যাতায়াতের রাস্তা তৈরি করে দেয়। কিন্ত আবাদি জমি চাষাবাদের কারনে সেটিও বিলিন হয়ে গেছে। এদিকে আসছে ফাল্গুনের ৫ তারিখ হিন্দু ধর্মালম্বীদের শিব চতুর্দশী পূজা। আর এই পূজাকে ঘিরে হাজারো ভক্তের সমাগম হয় এই মন্দিরে। এখন যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় চিন্তায় পরেছে এ এলাকার হিন্দু সম্প্রদায়ের লোকজন।
এ বিষয়ে হিন্দু সম্প্রদায়ের মৃত্যুঞ্জয় শর্মা বলেন, ফাল্গুন মাসে শিব পূজা। মন্দিরে অনেক ভক্তের সমাগম হয়। কিন্তু যাতায়াতের রাস্তা না থাকায় মন্দিরে প্রবেশ করা কষ্টকর হয়ে যাবে।
স্থানীয় বাসিন্দা রতন চক্রবর্তী বলেন, শত বছরের শ্মশান ও মন্দির এটি। তবে নেই কোন যাতায়াতের রাস্তা। তাই সরকারের কাছে আবেদন এখানে যেন রাস্তার ব্যবস্থা করা হয়।
এ বিষয়ে অপর এক স্থানীয় ধনঞ্জয় শর্মা বলেন, পূজার সময় কোন কিছু নিতে হলে অনেক কষ্টে করে নিতে হয়। কেউ মারা গেলে তার মরদেহ নিতে গেলে অন্যেও জমির উপর দিয়ে আনতে হয়। এতে করে অনেক সমস্যার সম্মুখিন হতে হয়। এখানে রাস্তা হলে আমাদের আর কোন সমস্যা থাকবে না।
এছাড়া যমুনা বালা নামের এক নারী বলেন, পূজার সময় প্রসাদ ও পূজা সামগ্রী আনতে অনেক কষ্ট করতে হয়। পায়ে হেটে এখানে আসতে হয়। যদি রাস্তা হয় তাহলে আর কোন সমস্যা হবে না।
এ বিষয়ে বটতলী শিব মন্দিরের সেবায়েত তাপস বর্মন বলেন, আমরা মন্দিরটি সকলের সহযোগীতায় পরিচালনা করে আসছি। তবে এখানে কোন যাতায়াতের ভালো ব্যবস্থা না থাকায় ভক্তগন অনেক কষ্ট করে পূজা আর্চনা করতে আসেন। ফাল্গুন মাসে শিব পূজায় মন্দিরে অনেক ভক্তের সমাগম হয়। আমাদের আর কোন চাওয়ার নেই। আমরা চাই এখানে রাস্তার ব্যবস্থা করে দেয়া হোক।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে হাতীবান্ধা উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. নাজির হোসেন বলেন, এ বিষয়ে একটি আবেদন পেয়েছি। এ নিয়ে উপজেলা সহকারী কমিশনারকে (ভূমি) নির্দেশ দেয়া হয়েছে। খোঁজ খবর নিয়ে তিনি সমস্যার সমাধান করা হবে।