লালমনিরহাটে কালবৈশাখী ঝড় ভারী শিলাবৃষ্টিতে ঘরবাড়িসহ ভুট্টা, মরিচ, পেঁয়াজ, বোরোর ক্ষেতেরও ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। এছাড়াও জেলার ৫টি উপজেলায় সড়কে গাছপালা ভেঙে পড়ে ও বিদ্যুতের তার ছিঁড়ে পড়ায় জনজীবন ও যানবাহন চলাচলে বিঘ্ন ঘটে। গতকাল শুক্রবার দিবাগত মধ্যরাত জেলার পাচঁটি উপজেলার বিভিন্ন এলাকার উপর দিয়ে কাল বৈশাখী ঝড় আঘাত হানে।
জানা গেছে, শুক্রবার রাত সাড়ে ১০টার পরে হঠাৎ কালো মেঘে ছেয়ে যায় লালমনিরহাটের আকাশ। মুহুর্তে কাল বৈশাখী ঝড় শুরু হয়। ঝড়ের সাথে বৃষ্টি শুরু হয়। চলে থেমে থেমে চলে কয়েক ঘন্টা। এভাবে কাল বৈশাখীর ছোবলে জেলার ৫টি উপজেলায় শতাধিক বসতবাড়ি, উঠতি ভুট্টা ও বোরো ধানসহ ফসলের ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। সব থেকে বেশি ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছে তিস্তা নদীর বাম তীর ঘেঁষা চরাঞ্চলের ছিন্নমুল পরিবারগুলো। কাল বৈশাখীর ছোবলে লন্ডভন্ড হয়েছে চরাঞ্চলের বেশ কিছু ঘর বাড়ি, গাছপালা আর উৎতি ফসলের ক্ষেত।কাল বৈশাখীর ছোবলে গাছ ভেঙ্গে বেশ কিছু স্থানে বৈদ্যুতিক লাইন ছিড়ে গেছে। ফলে জেলার অধিকাংশ এলাকায় বিদ্যুৎ সংযোগ বিচ্ছিন্ন রয়েছে। ফলে ধর্মপ্রান মুসলমানরা সেহরীর সময় বিদ্যুৎহীন অন্ধকারে চরম বিপাকে পড়ে।
ঈদ পরবর্তি ঘরে তোলা বোরো ধান ক্ষেত কাল বৈশাখীর ছোবলে মাটির সাথে মিশে গেছে। ভুট্টা ক্ষেতেও একই অবস্থা।আম, শসা, ঝিংগে, ও করলাসহ কৃষকদের নানান জাতের সবজি ক্ষেতেও প্রচুর ক্ষতি হয়েছে। সব মিলে কৃষক পরিবারে কান্নার রোল পড়েছে। একদিকে বসতবাড়ি লন্ডভন্ড অন্যদিকে কষ্টার্জিত ফসল ঘরে তোলার আগেই লন্ডভন্ড। ফলে কৃষিতে ব্যাপক ক্ষতি শ্বঙ্কা করছেন জেলার কৃষকরা।
আব্দুল আলম বলেন, গভীর রাতে ঝড়ে গাছপালা পড়ে অনেকের বাড়ি ঘরে ব্যাপক ক্ষতি হয়েছে। পাকা বোরো ধান আর ভুট্টা ক্ষেতে সব থেকে বেশি ক্ষতি হয়েছে। ঈদের পরেই যে ধান ঘরে তোলার কথা ছিল। সেই ধান আজ ঝড়ে লন্ডভন্ড হয়েছে। তিস্তা চরাঞ্চলের কোন বাড়ি ভাল নেই। প্রায় সব ঘরবাড়ি কাল বৈশাখীর ছোবলে লন্ডভন্ড হয়েছে। ঝড়ে উড়ে গেছে মানুষের বসত ঘর। এখন পর্যন্ত দুই জনের দুইটি টিনের ঘর খুঁজে পাওয়া যাচ্ছে না।
এ বিষয় লালমনিরহাট জেলা প্রশাসক আবু জাফর বলেন, কাল বৈশাখী ঝড়ে ক্ষতিগ্রস্থদের তালিকা করতে ইউএনওদেরকে নির্দেশনা দেয়া হয়েছে। তালিকা হলে তাদের অনুদান দেয়া হবে।