শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি নৌরুটে ঘূর্ণিঝড় ফণীর নিষেধাজ্ঞা অমান্য, স্পীডবোট ডুবে নিহতের সংখ্যা-৩

ঘূর্নিঝড় ফণীর নিষেধাজ্ঞা অমান্য করে শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি নৌরুটের চলাচল করায় পদ্মায় ট্রলারের সাথে সংর্ঘষে স্পিডবোট ডুবির ঘটনায় নিঁখোজের দু’দিন পর কলেজ ছাত্রসহ ২জনের লাশ উদ্ধার করেছে পুলিশ। এনিয়ে এ দূর্ঘটনায় ৩ জন নিহত হলো।
এ দূর্ঘটনায় শিমুলিয়া ঘাটে নিয়োজিত বিআইডব্লিউটিএ ও নৌ পুলিশের তৎপরতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এ ঘটনায় শিবচর থানায় মামলা দায়েরের পর গ্রেপ্তারকৃত ১০ স্পীডবোট চালককে জেল হাজতে প্রেরন করা হয়েছে। গ্রেপ্তারকৃত ১০ স্পীডবোট চালকের বাড়িই মুন্সীগঞ্জের লৌহজং এ।
এ সরেজমিনে বিআইডব্লিউটিএ ও পুলিশ সুত্রে জানা যায়, ঘূর্নিঝড় ফনির প্রভাবে বৃহস্পতিবার দুপুর সাড়ে বার টা থেকে শিমুলিয়া-কাঠালবাড়ি রুটে লঞ্চ ও স্পীডবোট চলাচল বন্ধ ঘোষনা করে বিআইডব্লিউটিএ।
লঞ্চ চলাচল সম্পূর্ন বন্ধ থাকলেও শিমুলিয়া পার থেকে গভীর রাত পর্যন্ত স্পীডবোট চলাচল করতে দেখা যায়। সন্ধ্যা থেকে সকল ফেরি চলাচল বন্ধ হয়ে গেলে যাত্রী চাপ আরো বেড়ে যাওয়ার সুযোগ নেয় স্পীডবোট চালকরা। রাতের গভীরতার মাঝেই চলছিল স্পীডবোট।
রাত সাড়ে ৮ টার দিক শিমুলিয়া ঘাট থেকে ২০ জন যাত্রী নিয়ে আল আমিন নামের চালক কাঠালবাড়ি ঘাটে রওনা করে। স্পীডবোটটি কাঠালবাড়ি ৪ নং ফেরি ঘাট এলাকায় আসলে বিপরীতমুখী ট্রলারের সাথে ধাক্কা লাগে। এতে স্পীডবোটটি ডুবে অন্তত ১০ যাত্রী আহত হয়। আহতদের মধ্যে ৩ যাত্রীকে শিবচর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে ভর্তি করা হলে মোঃ মুরাদ (২৫)নামের এক যাত্রী চিকিৎসাধীন অবস্থায় মারা যায়। আমির হামজা(৬) ও কলেজ ছাত্র মিরাজ হোসেন(২৩) নামের দুজন নিখোজ হয়। শুক্রবার ফায়ার সার্ভিসের ঢাকার ডুবুরী দল অভিযান চালিয়েও ব্যর্থ হয়।
শনিবার সকাল থেকেই পদ্মা নদীতে নিঁখোজ যাত্রীদের লাশের সন্ধান করে শিবচর থানা পুলিশ ও নিঁখোজের স্বজনরা।
সকাল সাড়ে ১১টায় কাঁঠালবাড়ি লঞ্চ ঘাটের কাছে কাশবনের কাছে ভাসমান অবস্থায় শিশু আমির হামজা(৬) ও মিরাজ হোসেন(২০)-এর মৃতদেহ উদ্ধার করা হয়। নিহত আমির হামজা শিবচর উপজেলা দত্তপাড়া ইউনিয়নের ইমরান ফরাজীর ছেলে এবং নিহত মিরাজ হোসেন বরিশাল জেলার বানাড়ীপাড়া উপজেলার লবনসারা গ্রামের আব্দুর রহমানের ছেলে। মিরাজ ঢাকার কবি নজরুল কলেজের স্নাতক ১ম বর্ষের ছাত্র। এনিয়ে স্পিডবোট দূর্ঘটনায় নিহতের সংখ্যা দাড়াল ৩জনে। ঘটনার দিন রাতে চিকিৎসাধীন অবস্থায় শিবচর হাসপাতালে মুরাদ হোসেন নামের এক যাত্রী নিহত হন।
এ ঘটনার পর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মোঃ আসাদুজ্জামান, সহকারী পুলিশ সুপার আবির হোসেন, ওসি জাকির হোসেন, ভাইস চেয়ারম্যান আতাহার বেপারি, পরিদর্শক(তদন্ত) আনোয়ার হোসেন, পরিদর্শক(অপারেশন) আমির হোসেন ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছেন।
উল্লেখ্য গত বৃহস্পতিবার রাতে শিমুলিয়া থেকে কাঠালবাড়িগামী স্পিডবোট ও বিপরীতমুখি ট্রলারের মুখোমুখি সংঘর্ষে একজন নিহত ও দশ আহত হয়। এ দূর্ঘটনায় স্বজনরা জানান প্রায় ২জন নিঁখোজ হয়।