লালমনিরহাটের কালীগঞ্জ উপজেলার ভোটমারী খাদ্য গুদাম থেকে প্রায় ২৫০ মেট্রিক টন চাল আত্বসাতের ঘটনায় গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আলমকে শনিবার আটক করা হয়েছে। জেলার হাতীবান্ধা উপজেলার দইখাওয়া সীমান্তবর্তি এলাকার একটি বাড়ি থেকে তাকে আটক করে থানায় নিয়ে আসা হয়। প্রায় তিন কোটি টাকার চাল আত্বসাতের ঘটনা ফাঁস হওয়ার পর প্রশাসন নড়েচড়ে বসেছে। এদিকে ঘটনা তদন্তে দুর্নীতি দমন কমিশনকে(দুদক) দায়িত্ব দেয়া হয়েছে।
কালীগঞ্জ উপজেলা নির্বাহী অফিসার(ইউএনও) জহির ইমাম জানান,গতকাল শুক্রবার অভিযান চালিয়ে উপজেলার শুকানদিঘি থেকে ৩০ মেট্রিক টন এবং ওইদিন রাতে অপর এক অভিযানে সাড়ে ২৪ মেট্রিক টন চাল উদ্ধার করে শনিবার সেগুলো কাকিনা খাদ্য গুদামের হেফাজতে দেওয়া হয়েছে। বাকি চাল উদ্ধারে অভিযান চলছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
সংশ্লিষ্ট সূত্র জানায়,গতকাল শুক্রবার দুপুরের দিকে কালীগঞ্জ উপজেলার শুকানদিঘি বাজার এলাকার চাল ব্যবসায়ী একরামুল হকের গোডাউনে অভিযান চালিয়ে ৬০০ বস্তায় ৩০ মেট্রিক টন চাল উদ্ধার করেন। একই বাজারের ব্যবসায়ী শফিকুল ইসলামের গোডাউন থেকে কিছু সরকারি চালের বস্তা উদ্ধার করেন। পরবর্তি ওইদিন রাতে তুষভান্ডার এলাকার ব্যবসায়ী ইউনুস আলী আশরাফীর গোডাউনে অভিযান চালিয়ে কিছু বস্তা উদ্ধার করেন। পরে তুষভান্ডার বাজারের একটি পেট্রোলপাম্পে রাখা চালভর্তি একটি ট্রাক আটক করেন। সেখানে পাওয়া যায় আরও সাড়ে ২৪ মেট্রিক টন সরকারি চাল। অন্যত্র পাঠাতে ব্যবসায়ী ইউনুস আলী ট্রাকটি ভাড়া করেছিলেন।
ট্রাকের মালিক শরিফুল ইসলাম সাংবাদিকদের জানান, বৃহস্পতিবার কাকিনার একটি অটোরাইস মিলে সাড়ে ২৪ টন চাল পাঠানোর কথা বলে তার ট্রাক ভাড়া করেন ব্যবসায়ী ইউনুস। পরে সেখানে না পাঠিয়ে রংপুরে পাঠানোর কথা বলেন। বিষয়টি আমার সন্দেহ হলে ট্রাকটি পাম্পে রেখে ওই ব্যবসায়ীকে চালান দেওয়ার কথা বলা হয়। এরই মধ্যে শুক্রবার রাতে প্রশাসন এসে চালগুলো জব্দ করে।
জানা গেছে, বেশ কয়েক বছর আগে নাটোরের গুরুদাসপুর থেকে অন্যত্র পাঠানো চালভর্তি একটি ট্রাক চুরি হয়। পরে সেই চাল কালীগঞ্জের ব্যবসায়ী ইউনুসের গোডাউন থেকে উদ্ধারের পর মামলা হয়েছিল।
কালীগঞ্জ থানার ওসি ইমতিয়াজ কবির ভোটমারী খাদ্য গুদামের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা ফেরদৌস আলমকে গ্রেফতারের সত্যতা নিশ্চিত করে জানান, থানায় দায়ের মামলাটি বিধি অনুযায়ী দুদককে হস্তান্তর করা হয়েছে।
শনিবার বিকেলে কালীগঞ্জ থানায় আটক ফেরদৌস আলমের কাছে চাল আত্বসাতের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘আমি মানসিকভাবে বিপর্যস্ত, আমার মাথা ঠিক নেই বা কথা বলার অবস্থায় আমি নেই।’ তিনি আর কিছু না বলে কাঁদতে শুরু করেন।