ইরানি অস্ত্র ব্যবস্থায় সাইবার হামলা চালাল যুক্তরাষ্ট্র

মধ্যপ্রাচ্যের তেল সমৃদ্ধ দেশ ইরানের ওপর সামরিক অভিযানের বিষয়ে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের নেওয়া সিদ্ধান্ত প্রত্যাহারের পর দেশটির অস্ত্র ব্যবস্থার ওপর সাইবার হামলা চালিয়েছে যুক্তরাষ্ট্র।
রবিবার (২৩ জুন) মার্কিন গণমাধ্যম ‘দ্য ওয়াশিংটন পোস্টে’র দাবি, ইরানি রকেট ও ক্ষেপণাস্ত্র ব্যবস্থা নিয়ন্ত্রণকারী কম্পিউটারের ওপর যুক্তরাষ্ট্র হামলা চালিয়ে তা পুরোপুরি অকার্যকর করে দিয়েছে।
সম্প্রতি পরমাণু ইস্যুতে কোনো ধরনের সমঝোতায় না পৌঁছানোয় ইরানের ওপর ক্রমবর্ধমান চাপ বৃদ্ধির অংশ হিসেবে উপসাগরীয় এলাকায় বিমানবাহী রণতরী ‘আব্রাহাম লিঙ্কন’ ও ক্ষেপণাস্ত্রসহ যুদ্ধ সরঞ্জাম মোতায়েন করেছিল যুক্তরাষ্ট্র। যদিও পরবর্তীতে আরব উপসাগরে তেলবাহী দুটি ট্যাঙ্কারে চালানো হামলার সঙ্গে ইরান জড়িত আছে দাবি করে বেশ কয়েকদিন আগেই মধ্যপ্রাচ্যে অতিরিক্ত এক হাজার সেনা মোতায়েনের ঘোষণা দিয়েছিলেন প্রেসিডেন্ট ট্রাম্প।
এসবের মধ্যে গত বৃহস্পতিবার অবৈধভাবে ইরানি আকাশ সীমায় প্রবেশের দায়ে ক্ষেপণাস্ত্র চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের ‘আরকিউ-৪ গ্লোবাল হক’ নামে একটি স্পাই ড্রোনকে ভূপাতিত করে ইরানি সেনারা। যদিও ভূপাতিতের সময় ড্রোনটি আন্তর্জাতিক পানি সীমায় ছিল বলে দাবি যুক্তরাষ্ট্রের।
মার্কিন গণমাধ্যমে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমসের’ প্রতিবেদনে জানানো হয়, সৌদি আরব ও সংযুক্ত আরব আমিরাতের তেলের ট্যাঙ্কারে হামলা এবং মার্কিন ড্রোন ভূপাতিতের ঘটনাকে কারণ দেখিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের পক্ষ থেকে ইরানি সেনাবাহিনীর অস্ত্র সরঞ্জামে সাইবার হামলাটি চালানো হয়েছে।
এ দিকে ব্রিটিশ গণমাধ্যমে ‘বিবিসি নিউজ’ জানায়, গত কয়েক সপ্তাহ যাবত যুক্তরাষ্ট্র ইরানের অস্ত্র ব্যবস্থায় সাইবার হামলা চালানোর পরিকল্পনা করে আসছিল। ইরানি সেনাবাহিনী ইসলামিক রেভ্যুল্যুশনারি গার্ড কর্পোরেশন (আইআরজিসি) যেসব অস্ত্র ব্যবহার করে; এবার সেগুলোকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে এই হামলাটি চালানো হয়।
অপর দিকে ‘ওয়াশিংটন পোস্ট’ ও ‘এপির’ প্রতিবেদনে জানানো হয়, যুক্তরাষ্ট্র সফল সাইবার হামলা চালানোর মাধ্যমে ইরানি অস্ত্র ব্যবস্থাকে পুরোপুরি অকার্যকর করে দিয়েছে। তবে ‘নিউ ইয়র্ক টাইমসের’ দাবি, তারা অনেক দিন আগে থেকেই ইরানের এই অস্ত্র ব্যবস্থা অকার্যকর থাকার খবর পেয়ে আসছে।
এর আগে ২০১৫ সালে ইরানের সঙ্গে স্বাক্ষরিত ছয় জাতির পরমাণু চুক্তি থেকে গত বছর যুক্তরাষ্ট্র নিজেদের বের করে নেন। একই সঙ্গে চুক্তিটিকে একটি অকার্যকর বলে উল্লেখ করে তেহরানের তেল বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা আরোপ করেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প।
যদিও এর পরপরই এই দুদেশ মধ্যকার সম্পর্কে এক বৈরিতা দেখা দেয়, যা এখনো অব্যাহত আছে। বর্তমানে এমন উত্তেজনাকর পরিস্থিতির মধ্যে মার্কিন ড্রোন ভূপাতিতের মাধ্যমে ইরান-যুক্তরাষ্ট্র মধ্যকার সম্পর্ক ক্রমশ যুদ্ধের দিকে যাচ্ছে বলে দাবি বিশ্লেষকদের।