ভারতের কোচবিহারে ফুটবল টুর্নামেন্টে অংশ নিতে দেশ ছেড়েছেন ফুটবল কন্যাদের গ্রাম খ্যাত রংপুরের সদ্যপুষ্কুরিনীর মেয়েরা।
গতকাল বৃহস্পতিবার (৪ মে) সকালে যাত্রা করে নারী ফুটবল দলটি বিকেলেই পৌঁছে যায় কোচবিহারের দেওয়ানগঞ্জে।
দলটির ১৪ জন ফুটবলারই সদ্যপুষ্কুরিনী যুব স্পোটিং ক্লাবের হয়ে ভারতে পাড়ি জমিয়েছেন।
জানা গেছে, দেওয়ানগঞ্জ কোচিং ক্যাম্প নক আউট টুর্নামেন্ট–২০২৩ এ বাংলাদেশের প্রতিনিধিত্ব করা রংপুরের মেয়েরা মাঠে নামবেন আগামী ৭ মে (রোববার)। ওইদিন বাংলাদেশ সময় বিকেল সাড়ে ৪টায় গোমটু ভুটানের মুখোমুখি হবে সদ্যপুষ্কুরিনী যুব স্পোটিং ক্লাবের মেয়েরা।
সদ্যপুষ্কুরিনী যুব স্পোটিং ক্লাবের অধিনায়ক সুলতানা আক্তার বলেন, আমরা রংপুরের হয়ে খেললেও সবাই আমাদের বাংলাদেশের ফুটবলার হিসেবেই দেখবে।
সদ্যপুষ্কুরিনী যুব স্পোটিং ক্লাবের কোর্চ মিলন মিয়া বলেন, আমাদের ক্লাব থেকে ১৪ জন খেলোয়াড়কে নিয়ে সীমিত পরিসরে এবার ভারত সফর করছি। সবাইকে নিয়ে যাওয়ার ইচ্ছা ছিল, কিন্তু আর্থিক সংকটের কারণে সম্ভব হলো না।
প্রসঙ্গত, রংপুর সদর উপজেলার অন্তর্গত হলেও সদ্যপুষ্কুরিনী ইউনিয়নটি শহর থেকে ১৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত। এই ইউনিয়নে দিন দিন তুমুল জনপ্রিয়তা পাচ্ছে ফুটবল। সেই জনপ্রিয়তা আসছে এখানকার ফুটবলকন্যাদের হাত ধরেই। এই অজপাড়াগাঁ থেকে জাতীয় নারী ফুটবল দলসহ বয়স ভিত্তিক দল ও বিভিন্ন ক্লাবে এ পর্যন্ত খেলছে ১৭ জন। দেশে–বিদেশে ভালো খেলে সুনামও কুড়িয়েছে তারা। নিজেদের পরিচয় মেলে ধরার স্বপ্ন অর্জনে রেখেছে কৃতিত্বের স্বাক্ষর। তাদের ফুটবল ম্যাজিকে সদ্যপুষ্কুরিনী এখন নারী ফুটবলারদের এলাকা হিসেবেই পরিচিত।
সদ্যপুষ্কুরিনী যুব স্পোর্টিং ক্লাবের অনেকেই দেশের হয়ে তাজিকিস্তান, ভুটান ও ভারতে খেলেছেন। তাজিকিস্তানে এএফসি অনূর্ধ্ব–১৪ ফুটবল প্রতিযোগিতায় চূড়ান্ত পর্বে ভারতকে ৯–০ গোলে হারিয়ে সেবার বাংলাদেশ শিরোপা জয়ী হয়। ওই দলের তিন ফুটবলার লাবণী আক্তার, আর্শিতা জাহান ও আঁখি আক্তার ছিলেন সদ্যপুষ্কুরিনী যুব স্পোর্টিং ক্লাবের সদস্য।
সদ্যপুষ্কুরিনীর মেয়েদের মুকুটে দফায় দফায় বাড়ছে সাফল্যের পালক। দেশের নারী ফুটবলের পুরোটাই যেন ঘিরে আছে রংপুরের নিভৃত পল্লী সদ্যপুষ্কুরিনীর নয়াপুকুর–পালিচড়ায়। নেপাল বিজয়ের পর যুব গেমসে স্বর্ণ পদক ছাড়াও একের পর এক সাফল্য এসেছে তাদের হাত ধরেই। এফসি অনূর্ধ্ব–১৭তেও গ্রুপ চ্যাম্পিয়ন হয় বাংলাদেশ। যেখানে নেতৃত্বে দিয়েছেন সদ্যপুষ্কুরিনীর জয়নব বিবি রিতা।
গেল বছরের সেপ্টেম্বরে নেপালকে হারানো ১০ নম্বর জার্সি পরিহিত খেলোয়াড় ছিলেন পালিচড়ার ইসরাত জাহান স্বপ্না। সেই আনন্দের রেশ না কাটতেই অনূর্ধ্ব–১৭ যুব গেমসে স্বর্ণ পদক প্রাপ্তি। যদিও অনেক বড় চ্যালেঞ্জ ছিল সেই যাত্রা। বার বার সাফল্যে সদ্যপুষ্কুরিনী যুব স্পোটিং ক্লাবের জুনিয়র ফুটবলারদের আনন্দের মাত্রাটা একটু বেশিই বৈকি। প্রত্যাশার ডালপালাও বাড়ন্ত তাদের। আর তাদের সাফল্যে আনন্দে উদ্বেলিত এলাকাবাসীও।