লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলায় সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানসহ ৫জনের বিরুদ্ধে ধর্ষণ ও সহায়তার অভিযোগে মামলা দায়ের করা হয়েছে। গতকাল মঙ্গলবার বিকেলে আদিতমারী থানায় মামলাটি দায়ের করেন নির্যাতিত স্কুল ছাত্রীর মা।
মামলায় অভিযুক্তরা হলেন, আদিতমারী উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের শাখা নেওয়াজ ও স্ত্রী মর্জিনা বেগম, তার ছেলে মিজানুর রহমান মিজান, মনসুর আলী এবং কমলাবাড়ি ইউনিয়ন পরিষদের সাবেক চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলাল।
পুলিশ ও স্থানীয়রা জানান, আদিতমারী উপজেলার বড় কমলাবাড়ি গ্রামের শাখা নেওয়াজের ছেলে মিজানুর রহমান দীর্ঘ ৫ বছর ধরে প্রতিবেশী এসএসসি পরীক্ষার্থী এক স্কুলছাত্রীর সাথে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলে। এরই মাঝে ৩ বছর আগে ওই স্কুল ছাত্রীর অন্যত্র বিয়ে হলেও প্রেমের সম্পর্ক অটুট রাখে প্রেমিক মিজান। বিয়ের একমাস পরেই প্রেমিকের কথামত স্বামীর বাড়ি ছেড়ে বাবার বাড়িতে চলে যায় ওই প্রেমিকা। বিয়ের প্রলোভনে তাদের প্রেমের সম্পর্ক গত কয়েক বছর ধরে দৈহিক সম্পর্কে জড়ায়। বিষয়টি উভয় পরিবারের মাঝে জানাজানি হলে বিয়ের প্রতিশ্রুতি দেন মিজান ও তার পরিবার।
প্রেমিক মিজান ও তার পরিবারের প্রতিশ্রুতি মোতাবেক গত ১৮ এপ্রিল প্রথম স্বামীকে তালাক দেন ওই স্কুলছাত্রী। তালাকের একদিন পর প্রেমিক মিজান ওই ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলালের খালাত বোনকে বিয়ে করেন। খবর পেয়ে বিয়ের দাবিতে ওই বাড়িতে অবস্থান নেন ওই স্কুলছাত্রী। বিয়ের দাবিতে অনশনে থাকায় চলতি এসএসসি পরীক্ষায় অংশ নিতেও পারেনি।
কমলাবাড়ি ইউনিয়নের সাবেক চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলাল প্রেমিক মিজানকে অন্যত্র বিয়ে দিতে এবং অনশন রত স্কুলছাত্রীকে তাড়িতে দিতে নানান ভাবে হয়রানী ও হুমকী প্রদান করেন বলে অভিযোগে উল্লেখ করা হয়।
এ ঘটনায় অনশনে থাকার ১৩ তম দিন ওই স্কুলছাত্রীর মা আদিতমারী থানায় তার মেয়েকে ধর্ষণ, ধর্ষণে সহায়তা ও হুমকীর অভিযোগে প্রেমিক মিজান তার পরিবার ও সাবেক ইউপি চেয়ারম্যানের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। মামলা গ্রহন করে প্রেমিক মিজানের বাড়ি থেকে স্কুলছাত্রীকে উদ্ধার করে আদিতমারী উপজেলা হাসপাতালে পাঠায় পুলিশ। তবে অভিযুক্ত প্রেমিক মিজানসহ সবাই পলাতক থাকায় কাউকে গ্রেফতার করতে পারেনি পুলিশ।
অভিযুক্ত সাবেক চেয়ারম্যান আলাল উদ্দিন আলাল বলেন, মিজান আমার খালাত বোনের সাথেও সম্পর্ক করেছিল। খালাত বোন বিয়ের দাবিতে অনশন করলে আমি গিয়ে সমাধান করে দিলে তারা বিয়ে করে নেয়। বিয়ের পরদিন থেকে ওই বাড়ি আরও এক মেয়ে এসে বিয়ের দাবিতে অনশন শুরু করেছে বলে শুনেছি। এ মামলায় অহেতুক আমাকে জড়ানো হয়েছে।
আদিতমারী থানার ওসি মোজাম্মেল হক বলেন, নির্যাতিত মেয়ের মায়ের অভিযোগটি নিয়মিত মামলা হিসেবে নথিভুক্ত করে অভিযুক্ত মিজানের বাড়ি থেকে মেয়েকে উদ্ধার করা হয়েছে। অভিযুক্তদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।